ঘুরে আসি: ইতিহাস ঐতিহাসিক সমৃদ্ধ বিনোদগঞ্জ


Binod Jong heronদক্ষিণ বাংলায় এরকম এক মনোমুগ্ধকর স্থান আছে তা ভাবাই যায় না। এখানে নাএলে সত্যিই কেউ বিশ্বাস করতে পারবেন না এমন স্বপ্নময় জগৎ বাংলায় আছে।খুলনা জেলার উপকূলবর্তী সুন্দরবন ঘেষা শিপসা, মিনহাজ, কপোতাক্ষ বিধৌতপাইকগাছা। এখানে একবার এলেই আপনার ধারণা পাল্টে যাবে। রায় সাহেব বিনোধবিহারী সাধুর বিনোদগঞ্জের মত দর্শনীয় স্থান বাংলায় মেলা ভার। বিনোদগঞ্জেরচারপাশ পুরাকীর্তিতে ঠাসা। এখান থেকে ঘুরে এসে বিভিন্ন খোঁজ খবর নিয়েলিখেছেন: শরিফুল ইসলাম হিরণ, ছবি: তুলেছেন দীপ অধিকারী

বিনোদগঞ্জের প্রবেশ পথের প্রথমে ডান দিকে দেখতে পাবেন ভারত চন্দ্রহাসপালাত ও  যাদব চন্দ্র দাতব্য চিকিৎসালয়। যে দিকে তাকাবেন সে দিকে শুধুজনদরদী মহাপুরুষ, জন সেবক রায় সাহেবের স্মৃতি নিদর্শণ আপনার চোঁখে পড়বে।বিনোদ বিহারী সাধু তাঁর পিতামহ ভরত চন্দ্রের নামে বাং- ১৩৩৭ সনে দুঃস্থমানুষের সেবায় বিশ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ও পিতার নামে যাবদ চন্দ্রদাতব্য চিকিৎসালয় নির্মাণ করেন। এই হাসপাতালটি ১৯৭৫ সালে সরকারী করা হয়।দ্বি-তল এই হাসপাতালটি অবহেলায় সেই লোহার গোল সিঁড়িটি ধ্বংস হয়ে গেছে, তেমনি প্রতিটি ভবনের প্লাষ্টার খসে শ্রীহীন হয়ে পড়েছে। অবহেলার জন্যহাসপাতালের ষ্টাফ কোয়ার্টার ও পুকুরটির শ্রী হারিয়ে ফেলেছে। অথচ যখনখুলনা শহরে বিদ্যুৎ ছিল না তখন এই হাসপাতাল সহ কপিলমুনি বাজারে রায় সাহেবনিজস্ব জেনারেটর দিয়ে আলো জ্বালিয়ে রাখতেন। ঘুরে ফিরে এই হাসপাতালে বিশালএলাকা দেখতে আপনার ভাল লাগবে। সামনের কিছু দূর এগোনোর পর রাস্তার বামপাশে  কপিলমুনি সহচারী বিদ্যামন্দির স্কুলটি দেখতে পাবেন।
কপিলমুনি সহচরী বিদ্যামন্দির – মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত কপিলমুনি
সহচরীবিদ্যামন্দিটি ১৯২৬ সালে রায় সাহেব বিনোদ বিহারী এ অঞ্চলে শিক্ষার আলোজ্বালাতে প্রথম প্রতিষ্ঠা করেন। সহচরী দেবী বিনোদ বিহারী সাধুর মায়ের নাম।কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর যদুনাথ সরকার, এম, এ রায় চাঁদপ্রেম চাঁদ ১৯২৭ সালে সহচরী বিদ্যামন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন করেন। এইবিদ্যালয়টি দক্ষিণ খুলনার একটি ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ। এই বিদ্যারয়েরখেলার মাঠটি এখন ঐতিহাসিক মাঠ হিসেবে খ্যাত। এখানে ১৯৭১ সালে বীরমুক্তিযোদ্ধারা রাজাকারদের সাথে প্রায় এক সপ্তাহ অবিরাম যুদ্ধের পররাজাকাররা স্যালেন্ডার করায় এবং ১৫২ জন রাজাকারকে জনতার আদালতে বিচারের পরএই মাঠেই সারিবদ্ধভাবে গুলি করে মারা হয়। বিদ্যালয়টির অমৃতময়ীমিলনায়তন, গেষ্ট রুম, ছাত্রাবাস সহ ক্যাম্পাস ঘুরতে ঘুরতে মনে হবে কোনকলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে যেন ঘুরছেন। সহচরী বিদ্যামন্দির থেকে বেরিয়েরাস্তার বাম পাশে দেখতে পাবেন। নয়োনাভীরাম স্থাপত্য শিল্পে নির্মিত বেদমন্দির।
বেদ মন্দির – বিনোদগঞ্জ বেদমন্দির প্রাচীন স্থাপত্য শিল্পের এক অপরূপনিদর্শন। কপিলমুনিতে নতুন এলে এ বেদমন্দিরটি দেখে আপনি অভিভুত হবেন। এ বেদমন্দিরটি রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধুর বাড়ী সংলগ্ন বাড়ীর সীমানার মধ্যেঅবিস্থিত। বেদ মন্দিরটি শ্বের পাথরের নির্মিত গোলক আকৃতির। রায় সাহেববাং- ১৩৩৮ সানে এই বেদমন্দিরটি নির্মান করেন। রায় সাহেবের আসন আকৃতিরপ্রতিকৃতি এই বেদ মন্দিরে রাখা আছে। পাশে আছে শিব ও কালী মূর্তি। মন্দিরটিসব সময় দর্শীয় উপাসনায় আনন্দ মুখর থাকে। পাশে রয়েছে শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণমন্দির ও আশ্রম। বেদমন্দির চত্বরে কিছু সময় বসে থাকলে ঈশ্বের নাম জপতেআপনার ইচ্ছা হবে। এর পর দেব মন্দিরের পাশেই স্বর্গীয় রায় সাহেব বিনোদবিহারী সাধু বাড়ীটি দেখতে পাবেন।
বিনোধ বিহারী সাধু খাঁর বাড়ী – দক্ষিণ বাংলার বিনোদ বিহারী সাধু খাঁ একমহান পুরুষের নাম। মানব সেবার উৎসর্গীয়কৃত সেরা বাণিজ্য কেন্দ্রকপিলমুনির আধুনিক রুপকার তিনি। তাঁর অসংখ্য কীর্তি ছড়িয়ে আছে সেবামূলকপ্রতিষ্ঠান হিসাবে কপিলমুনি বাজারের কেন্দ্রস্থলে বিনোদ বিহারীর বাড়িটিযেন এক ঐতিহাসিক বাড়ী হিসাবে খ্যাত। বাড়ীটি পাইকগাছা-খুলনা সড়কের পশ্চিমপার্শ্বে ও কপোতাক্ষ নদীর পূর্ব তীরে অবস্থিত। বিশেষ করে ১৯৭১ সালেস্বাধীনতা যুদ্ধের পর হতে এ বাড়ীটির গুরুত্ব বেড়ে যায়। রায় সাহেবের এবাড়িটির স্থাপত্য কারুকাজ ও বৈশিষ্ট্য দেখে সত্যিই বিষ্ময় বোধ করতে হয়।বাড়ীটি ১৯১৬ সালে নির্মিত হয়। বর্তমানে এ বাড়ীতে তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্ররাবসবাস করছেন।

পথের হদিশ: ঢাকা থেকে বাসে কিংবা প্রাইভেট যোগে খুলনায় আসতে হবে। খুলনাথেকে পাইকগাছা উপজেলা কপিলমুনি (বিনোদগঞ্জ) আসতে হবে। একটু দ্রুত আসতে হলেঢাকা থেকে বিমানযোগে যশোর বিমান বন্দর নামনে হবে। সেখান থেকে বাস কিংবাপ্রাইভেট যোগে পাইকগাছা উপজেলা কপিলমুনি (বিনোদগঞ্জ) আসতে পারেন। থাকাখাওয়ার জন্য খুলনা শহর এবং যশোর শহরে উন্নত মানের হোটেলে থাকতে পারবেন। এছাড়া পাইকগাছা উপজেলাতেও আবাসিক হোটেল পাবেন। এবং চাইলে সহযোগিতা নিতেপারেন, খুলনার ভ্রমন সংগঠন Itche Vramon Bangladesh -ইচ্ছে ভ্রমন বাংলাদেশ, ফোন:০১৯১৭১৭৩৪১৮, ই-মেইল: issavromon@gmail.com

No comments:

Post a Comment